মহিলাদের ফজিলত পূর্ণ চল্লিশ হাদিস
মহিলাদের ফজিলত পূর্ণ চল্লিশ হাদিস
১। রাসুল সা. বলেছেন, কোন নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে রমজানের রোজা রাখে যৌনাঙ্গের
পবিত্রতা রক্ষা করে স্বামীর নির্দেশ পালন করে তাকে বলা হবে তুমি জান্নাতের যে দরজা
দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করো- মিশকাত ৩২৫৪
২। রাসুল সা. বলেছেন, দুনিয়ার সমস্ত বস্তু তুচ্ছ ও ক্ষণস্থায়ী আর এ তুচ্ছ ও ক্ষণস্থায় বস্তুর
মাঝে মুসলিম সতী সাধ্বী নারী সর্বোত্তম সম্পদ- মিশকাত- ৩০৮৩
৩। রাসুল সা. বলেছেন, তাকওয়া ও আল্লাহ ভীতির পরে সতী-সাধি স্ত্রী অপেক্ষা অধিক উত্তম আর কোন নেয়ামত
মমিন লাভ করতে পারেনি তার স্বামী কোন কিছুর আদেশ করলে তৎক্ষণাৎ সে তা পালন করে স্বামী
যদি তার বিষয়ে কোনো শপথ করে তবে সে স্বামীকে শপথ মুক্ত করে দেয়। মিশকাত- ৩০৯৫
৪। রাসুল সা. বলেছেন, যে নারী মারা যায় আর তার স্বামী তার প্রতি খুশি থাকে সেই নারী জান্নাতে
প্রবেশ করবে ।- মিশকাত ৩২৫৬
৫। রাসুল সা. কে জিজ্ঞেস করা হলো সর্বোত্তম নারী
কে? উত্তরে তিনি বলেন, যে নারীর স্বামী তার দিকে তাকালে তাকে
ব্যবহারে সন্তুষ্ট করে দেয় স্বামী কোন আদেশ করলে তা পালন করে এবং নিজের ও টাকা-পয়সার
ব্যাপারে স্বামীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করেনা । মিশকাত- ৩২৭২
৬। রাসুল সা. বলেছেন, তিন ব্যক্তির নামাজ কবুল হয় না এবং তাদের নেক কাজ ঊর্ধ্বমুখী হয় না , প্রথমত
পলাতক গোলাম যতক্ষণ না সে মালিকের নিকট ফিরে আসে।
দ্বিতীয়তঃ যে স্ত্রীর প্রতি তার স্বামী অসন্তুষ্ট । তৃতীয়ত মাতাল ব্যক্তি
যতক্ষণ না তার চৈতন্য ফিরে আসে। মিশকাত- ৩২৭১
৭। রাসুল সা. বলেছেন,, নারী জাতি আবরণীয় বিষয় যখন সে বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে
রমনীয় করে দেখায়। মিশকাত- ৩১০৯- তিরমিযি-১১৩৭
৮। রাসুল সা. বলেছেন,, মেয়ে দিয়ে যাকে পরীক্ষার সম্মুখীন করা হয় সে যদি তাদের বিষয়ে ধৈর্য
ধারণ করে তবে তারাই তার জন্য জাহান্নামের পথে পর্দা হয়ে দাঁড়াবে। তিরমিজি- ১৯১২
৯। রাসুল সা. বলেছেন,, যে ব্যক্তি দুটো মেয়ে সন্তান লালন-পালন করবে সে আর আমি এভাবে পাশাপাশি
জান্নাতে প্রবেশ করব এরপর তিনি দুইটি আঙ্গুল ইশারা করে দেখালেন। তিরমিজি- ১৯১৪
১০। রাসুল সা. বলেছেন,, যার তিনটি মেয়ে কিংবা তিনটি বোন থাকে অথবা দুইটি মেয়ে কিংবা দুইটি বোন
থাকে সে যদি তাদের সাথে সব সময় ভালো ব্যবহার করে এবং তাদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় করে
তবে তার জন্য রয়েছে জান্নাত। তিরমিজি- ১৯১৬
১১। হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,,
চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়। ১। নারীর সম্পদ ২। বংশ মর্যাদা ৩। তার সৌন্দর্য
৪। তার ধর্মপরায়ণতা। মিশকাত- ৩ হাজার ৮২
ফায়দা-ধর্মপরায়ণ
নারীকে বিয়ে করা প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
১২। রাসুল সা. বলেছেন, তোমরা স্বামী ভক্তি ও অধিক সন্তান প্রসবকারিনী রমণীকে বিবাহ করো। কেননা আমি
কেয়ামতের দিবসে তোমাদের সংখ্যা ধিক্যের কারণে অন্যান্য উম্মতের সম্মুখে গর্ব প্রকাশ
করব। মিশকাত- ৩০৯১
১৩।হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,,
রাসুল সা.বলেছেন, স্বল্প খরচের বিবাহ সর্বপেক্ষা বরকতময়।
মিশকাত-৩০৯৭
ফায়দা- উক্ত হাদিস দ্বারা বুঝা যায় সর্বক্ষে
মিতব্যয়িতা অবলম্বন করা শরীয়ত সম্মত কর্ম কোন অবস্থাতেই অতিরিক্ত করা উচিত নয় কেননা
পবিত্র কোরআনে এসেছে, অপব্যয়ী শয়তানের ভাই তাই বিবাহকর্মে কম খরচকরাকে রাসূল সা. সর্বাপেক্ষা
বরকতময় বলেছেন,।
১৪। রাসুল সা. বলেছেন,, কোন পুরুষ যেন অপর পুরুষের এবং কোন নারী যেন অপর নারীর শতর না দেখে আর কোন
পুরুষ যেন অপর পুরুষের সাথে আবরণ ব্যতীত এক কাপড়ের নিচে শয়ন না করে এবং কোন নারী
ও যেন অপর নারীর সাথে আবরণ হীন ভাবে একই লেপের নিচে শয়ন না করে। মিশকাত- ৩১০০
১৫। রাসুল সা. বলেছেন, তোমরা গাইরে মাহরাম নারীদের কাছে প্রবেশ কোরোনা (এটা শুনে) এক ব্যক্তি বলল
ইয়া রাসুল আল্লাহ দেবর সম্পর্কে আপনার মতামত কি? সে কি ভাবির নিকট প্রবেশ করতে পারবে?
রাসুল সা. বলেন, দেবর তো মরণসম। মিশকাত- ৩১০২
ফায়দা- উক্ত হাদীস দ্বারা বুঝা যায়, দেবরের সাথে
দেখা সাক্ষাৎ করা না জায়েয, সুতারাং দেবরের সাথে দেখা করা যাবে না।
১৬। হযরত উম্মে সালমা রা. বর্ণনা করেন, একবার তিনি রাসুল সা. এর নিকট উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ অন্ধ সাহাবী
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রা. তার খেদমতে আসলেন তখন রাসূল সা. তাদের উভয়কে
নির্দেশ দিলেন তোমরা পর্দার আড়ালে যাও। হযরত উম্মে সালমা রা.বলেন,
আমি বললাম সে তো অন্ধ সে তো আমাদেরকে দেখতে পাচ্ছে না তবে কেন আমরা পর্দার আড়ালে যাব?
রাসূল জবাবে বলেন, তোমরা দুজন কি অন্ধ? তোমরা কি তাকে
দেখতে পাচ্ছ না?- মিশকাত- ৩১১৬
ফায়দা-
এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, মহিলাদের জন্য পুরুষদের দিকে তাকানো নিষেধ।
১৭। হযরত ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
রাসুল সা. বলেছেন, কোন নারী যেন অপর নারীর সাথে মেলামেশা
ও শরীর স্পর্শ করার পর স্বীয় স্বামীর কাছে উক্ত এরূপ বর্ণনা প্রদান না করে যেন তার
স্বামী তাকে আপন চোখে দেখছে। মিশকাত- ৩০৯৯
ফায়দা-
উক্ত হাদিস দ্বারা বোঝা যায় যে, কোন মহিলা অপর মহিলার সাথে সাক্ষাৎ করা বা মেলামেশা
করা অপরাধ নয় কিন্তু সেই মহিলার রূপ সৌন্দর্যের বর্ণনা স্বামীর কাছে প্রকাশ করা উচিত
নয় এতে স্বামীর মনে নিজের স্ত্রীর ব্যাপারে বিতৃষ্ণা জন্মাতে পারে এবং উক্ত মহিলার
প্রতি তার আকর্ষণ বেড়ে যেতে পারে। মিশকাত- ৩০৯৯
১৮। হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
রাসূল সা. বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ কোন নারীকে বিবাহের
প্রস্তাব দেয় তখন যদি তার পক্ষে এমন কোন জায়েজ অঙ্গ দেখা সম্ভব হয় যা তাকে সে নারীকে
বিবাহ করতে উদ্বুদ্ধ করে তখন সেযেন তা দেখে। মিশকাত- ৩১০৬
ফায়দা-
বিবাহের পূর্বে পাত্রী দেখা সুন্নত উক্ত হাদিসে জায়েজ অঙ্গ দেখানোর দ্বারা উদ্দেশ্য
হলো মুখমন্ডল, হস্তদ্বয় ও পায়ের তালু।
১৯। হযরত ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
রাসুল সা. বলেছেন, তোমরা কখনো উলঙ্গ হবে না। কেননা তোমাদের
সাথে তারা থাকেন যারা তোমাদের নিকট থেকে পৃথক হয় না তোমাদের পায়খানা পেশাব ও স্ত্রী
সহবাসের সময় ব্যতীত সুতরাং তোমরা তাদের ব্যাপারে লজ্জাবোধ করো এবং তাদেরকে সম্মান
করো। মিশকাত- ৩১১৫
ফায়দা-
সুতরাং এই হাদিসের গুরুত্বের প্রতি খেয়াল করে বলা হয়েছে প্রয়োজন ব্যতীত লজ্জাস্থান
খোলা জায়েজ নেই।
২০। হযরত হাসান বছরী রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
আমার নিকট পৌঁছেছে রাসুল সা. বলেছেন, আল্লাহ লানত করেন(
ইচ্ছাকৃত বেগানা নারীর প্রতি) দৃষ্টিকারী এবং যে( নারী ইচ্ছাকৃতভাবে) দৃষ্টিতে পতিত
হয় তার প্রতি। মিশকাত- ৩১২৫
ফায়দা-
সুতরাং প্রত্যেক নারী ও পুরুষের কর্তব্য হল তারা যেন স্বীয় দৃষ্টি নিম্নমুখী রাখে
আর নিজ লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।
২১। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত তিনি
বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, এতিম কন্যাকে তার
নিজের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে হবে যদি সে নীরব থাকে তবে তার অনুমতি হিসেবে গণ্য হবে।
আর যদি সে অস্বীকার করে তবে তার উপর জবরদস্তি চলবে না। মিশকাত- ৩১৩৩
২২। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত তিনি
বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, কোন নারী যেন তার
ধর্মীয় বোনের তালাক না চায়। উদ্দেশ্য তার পাত্র খালি করে এবং নিজে বিবাহ করা কারণ
তার জন্য যা নির্ধারিত তার সে অবশ্যই পাবে। মিশকাত- ৩১৪৫
ফায়দা-
উক্ত হাদিস দ্বারা উদ্দেশ্য হল কোন ব্যক্তির এক স্ত্রী থাকা অবস্থায় সে আরেক মহিলাকে
বিবাহর প্রস্তাব দিলে সে যেন এই শর্ত আরোপ না করে যে তোমার পূর্বের স্ত্রী তালাক দাও
তবে আমি তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হব। শরীয়ত এরূপ শর্ত বাতিল করেছে কেননা তার ভাগ্যে যা আছে তা আবশ্যকীয় ভাবে পাবে ফলে অন্যের ক্ষতি সাধনের
তার কোন প্রয়োজন নেই।
২৩। হযরত আবু সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত কেয়ামতের
দিন আল্লাহতালার দরবারে সর্বাধিক বড় খেয়ানত হলো যে তার স্ত্রীর সাথে পরস্পর গোপন
মিলনের পর সে তার স্ত্রীর গোপনীয়তা মানুষের মাঝে প্রকাশ করে। মিশকাত- ৩১৯০
ফায়দা- স্বামী স্ত্রীর গোপন মিলনটি একটি পবিত্র
আমানত একে লোক সমাজে প্রকাশ করা আমানতের খেয়ানত করা এরূপ ব্যক্তির জন্য রয়েছে কঠোর
শাস্তি।
২৪। হযরত আবু হুরায়রা রা. রাসুল সা. থেকেও বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তির
কাছে দুজন স্ত্রী থাকে আর সে তাদের মধ্যে সমতা রক্ষা না করে কেয়ামতের দিন সে একপার্শ্ব
অকেজো অবস্থায় উঠবে। মিশকাত- ৩২৩৬
ফায়দা- উক্ত হাদিস দ্বারা বোঝা যায় কারো একাধিক
স্ত্রী থাকলে তাদের খাদ্য বস্ত্র এবং তাদের কাছে রাত্রি যাপনের ব্যাপারে সমতা রক্ষা
করা ওয়াজিব এটা যে না করবে সে গুনাগার হবে।
২৫। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত তিনি
বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, কোন মুমিন যেন কোন
মুমিন নারীকে ঘৃণা না করে কেননা যদি সে তার এক ব্যবহারকে
অপছন্দ করে তবে তার ওপর ব্যবহারকে পছন্দ করবে( অর্থাৎ তার সব কাজ খারাপ নয়)। মিশকাত-
৩২৪০
ফায়দা- উক্ত হাদিস দ্বারা বোঝা যায় স্ত্রীর
কোন কাজ কিংবা স্বভাব বিরোধী ব্যবহার দেখে হঠাৎ রাগান্বিত হওয়া ঈমানদারদের জন্য শোভনীয়
নয় কেননা মুমিন স্ত্রী সব কাজেই খারাপ বা অপছন্দনীয় হতে
পারে না সুতরাং তাকে সংশোধন করার চেষ্টা থাকতে হবে।
২৬। হযরত আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
রাসুল সা. বলেছেন, যদি আমি কোন মানুষকে অপরের সেজদা করার
নির্দেশ দিতাম তবে স্ত্রীকে হুকুম করতাম যেন সে তার স্বামীকে সেজদা করে। মিশকাত- ৩২৫৬
ফায়দা- আলোচ্য হাদীস থেকে স্বামীর প্রতি কি
পরিমান অনুগত্য ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন স্ত্রীর কর্তব্য তা সহজেই বোঝা যায়। স্বামী হলো
স্ত্রীর সবচেয়ে বড় সম্পদ তাই স্বামীর গুরুত্ব বোঝানোর জন্যই রাসুল সা. উক্ত হাদিসটি
বর্ণনা করেছেন।
২৭। রাসুল সা. বলেছেন, স্বামী যখন নিজ প্রয়োজনে স্ত্রীকে
ডাকে স্ত্রী যেন তৎক্ষণাৎ তার কাছে চলে আসে যদিও সে চুলার পাশে রান্নার কাজে থাকে।
মিশকাত-৩২৫৭
ফায়দা- স্বামী নিজ প্রয়োজনে স্ত্রীকে আহবান
করলে সেই আহবানে সাড়া দেওয়া স্ত্রীর জন্য অপরিহার্য। স্বামীর প্রয়োজন মেটানোর ব্যাপারটিকে
এত গুরুত্ব দেওয়ার তাৎপর্য সম্ভবত এটাই হবে যে, স্বামীর প্রবল কামোত্তেজনার সময় স্ত্রী
কাছে না গেলে হয়তো স্বামী অন্য কোন নারীর সাথে অবৈধ যৌনাচারে মিলিত হতে পারে যা উভয়ের
জন্য অকল্যাণ বয়ে আনবে।
২৮। রাসুল সা. বলেছেন, পৃথিবীতে যখন কোন নারী তার স্বামীকে কষ্ট দেয় তখন উক্ত স্বামীর জান্নাতে
থাকা হুর বিবিরা বলতে থাকে আল্লাহ তোকে ধ্বংস করুক তুই তাকে কষ্ট দিস না সে তো তোর
কাছে পরবাসী অতি শীঘ্রই তোকে ছেড়ে সে আমার কাছে চলে আসবে। মিশকাত-৩২৫৮
২৯। রাসুল সা. বলেছেন, যে নারী অহেতুক স্বামীর কাছে তালাক কামনা করে তার জন্য জান্নাতের ঘ্রাণও
হারাম। মিশকাত- ৩২৭৯
৩০। হযরত উম্মে আতিয়্যা থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ
সা. বলেছেন, কোন মৃতের জন্য নারী যেন তিন দিনের বেশি শোক
প্রকাশ না করে অবশ্য স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন করবে লাল গোলাপি কাপড় পরিধান
করবে না অবশ্য লাল কাপড় বিশিষ্ট সাদা কাপড় পড়তে পারে সুরমা লাগাবে না, সুগন্ধি ব্যবহার
করবে না অবশ্য মাসিক স্রাব থেকে পবিত্র হওয়া কালীন কুসত ও আযফার জাতীয় কাঠের সুগন্ধি
ব্যবহার করতে পারে। মিশকাত-৩৩৩১
৩১। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত তিনি
বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বামীর
বিরুদ্ধে স্ত্রী কে মালিকের বিরুদ্ধে দাস কে প্রোচনা দেয় সে আমার দলভুক্ত নয়। মিশকাত-
৩২৬২
৩২। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত তিনি
বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, যখন স্বামী তার স্ত্রীকে
তার বিছানার দিকে আহবান করে আর স্ত্রী সে আহবান প্রত্যাখ্যান করে এবং স্বামী অসন্তুষ্ট
অবস্থায় রাজ যাপন করে তখন ফেরেশতাগণ তার জন্য ভোর পর্যন্ত লানত করতে থাকে। মিশকাত-৩২৪৬
ফায়দা- ফেরেশতাদের লানতের কারণ হলো স্বামীর
কথা না মানা কেননা নারীদের জন্য ফরজ স্বামীর
কথা মান্য করা যদি স্বামীর নির্দেশ শরীয়ত বিরোধী না হয়।
৩৩। হযরত আসমা রা. থেকে বর্ণিত আছে যে এক নারী
রাসূল সা.কে জিজ্ঞাসা করল ইয়া রাসুল আল্লাহ আমার স্বামী আমাকে যে বস্তু দেয়নি আমার
সতীনের সামনে যদি এমন ভাব করি তিনি আমাকে তার চেয়েও বেশি দিয়েছেন। তাতে কি আমার গুনাহ
হবে? উত্তরে বলেন,, না পেয়েও পাওয়ার ভানকারী যেন মিথ্যার
দুটি পোশাক পরিধান কারি। মিশকাত-৩২৪৭
৩৪। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত তিনি
বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, যখন তোমাদের নিকট
এমন লোক বিবাহের প্রস্তাব করে, যার দ্বীনদারী ও চরিত্রকে তোমরা পছন্দ করো তখন বিয়ে
দিয়ে দাও যদি তা না করো তবে পৃথিবীতে ফেতনা ও বড় বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। মিশকাত- ৩০৯০
ফায়দা-
অত্র হাদিসের শেষাংশে একটি বিষয়ের উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তা হলো দ্বীনদারবরের
পক্ষ থেকে প্রস্তাব আসার সাথে সাথে বিবাহ কার্য সম্পন্ন করা কেননা বরের ধন-সম্পদ নেই শুধু এই কারণে যদি বিবাহ-কর্ম সম্পন্ন না করে
তাহলে সমাজে যুবক যুবতীর সংখ্যা বেড়ে যাবে যার কারণে সমাজে যেনা-ব্যভিচারের মত অন্যায়
অপকর্ম দিন দিন বেড়ে যাবে এর ফলে মানব সমাজ পশু সমাজে রূপান্তরিত হবে এবং অভিভাবকগণও
লজ্জায় পড়তে থাকবেন।
৩৫। হযরত আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
তোমরা নারীদের সম্পর্কে ভালো ব্যবহার কর কেননা নারীদেরকে পাঁজরের বাঁকা হার থেকে সৃষ্টি
করা হয়েছে। আর পাজরের হাড়ের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বাঁকা হার হলো উপরের হার অতএব যদি
তুমি ওই হারকে সোজা করতে যাও তবে ভেঙে ফেলবে আর যদি তা ফেলে রাখো তবে সব সময় বাঁকা
থাকবে অতএব তোমরা নারীদের সাথে ভালো ব্যবহার কর। মিশকাত-৩২৩৮
ফায়দা-
উক্ত হাদিস দ্বারা বুঝা যায় নারীদের কৌশলে সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে কার্য
সমাধা করিয়ে নিতে হবে।
৩৬। রাসুল সা. বলেছেন, তোমরা সেই মহিলাদের নিকট গমন করো না যাদের স্বামীরা বিদেশে আছে। কারণ শয়তান
তোমাদের রক্ত শিরায় প্রবাহিত হয়। তিরমিজি-১১৭২
৩৭। রাসুল সা. বলেছেন, দুই শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামের অধিবাসী যাদেরকে আমি দেখিনি। তারা ভবিষ্যতে
আসবে প্রথম শ্রেণী হবে একদল অত্যাচারী, যাদের সাথে থাকবে গরুর লেজের মত চাবুক যার দ্বারা
লোকদেরকে প্রহার করবে আর দ্বিতীয় শ্রেণী হল সেই নারীর দল যারা কাপড় পরিধান করবে তবুও
তারা উলঙ্গ অবস্থায় থাকবে নিজেরা অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং অন্যদেরকেও তাদের প্রতি
আকৃষ্ট করবে যাদের মস্তক (খোপা বাধার কারণে) উটের হেলে যাওয়া কুঁজের মত হবে তারা জান্নাতে
প্রবেশ করবে না তার ঘ্রাণও পাবে না অথচ জান্নাতের সুগন্ধ বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও
পাওয়া যাবে। মুসলিম শরীফ
৩৮। রাসুল সা. মসজিদের বাহিরে দেখতে পান যে নারীরা
রাস্তায় পুরুষের সাথে মিশে গেছেন তখন আল্লাহর রাসূল সা. নারীদের বলেন,
তোমরা অপেক্ষা করো কারণ তোমাদের জন্য রাস্তার মাঝে হাটা উচিত নয় তোমাদের জন্য হল রাস্তার
পাশ এ কথা শুনে নারী দেয়াল ঘেঁষে হাঁটা শুরু করেন তখন দেখা গেল তাদের অনেকের কাপড়
দেয়ালের সাথে মিশে যেত। আবু দাউদ- ৫২৭২
৩৯। রাসুল সা. বলেছেন, নারিদের বেশধারী পুরুষের
উপর অভিশাপ এবং পুরুষের বেশধারী নারিদের উপর আল্লাহর অভিশাপ। ইবনে মাজাহ- ১৯০৪
৪০। রাসুল সা. বলেছেন, যে নারীর মাথায় এমন চুল
বাড়তি লাগায় যা তার মাথার নয়, তাহলে সে তার মাথায় জালিয়াতি সংযোগ করল। সহিহ আল- জামিউস
সগির-২৭০৫